Saturday, May 11, 2013

কলকাতা এলাইভ!!!


বেশ কিছুদিন আগে দুটো বই পড়েছি, একটার প্রেক্ষাপট কলকাতা, অন্যটা বেনারাস। পড়তে পড়তে শ্রীপান্থ-র লেখা "কলকাতা" বইটার কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল। কলকাতা নিয়ে কিছু বই পড়েছি তার মধ্যে এটাই সবচেয়ে ভালো লাগে, ছোট ছোট প্রবন্ধ, অতি সাধারণ জিনিষ নিয়ে লেখা কিন্তু প্রতিতাই শহরের ইতিহাস এর সঙ্গে অতপ্রত ভাবে জড়িয়ে। বইটাতে যে জায়গাগুলোর কথা বলা আছে তার কিছু জায়গাতে আমি গেছি, কিছু প্রথমবার জেনেছি। ব্রীটিশ অধিকৃত কলকাতার বিভিন্ন জিনিষ নিয়ে বেশি লেখা, যেমন কবরখানা যা বহু দূর্মূল্য ইতিহাসের কথা বলে। এর কিছু স্ব-চোখে দেখা।

কলকাতার এই অতীতকে আমরা প্রায় ভুলে গেছি, জব চার্ণকের কলকাতাকে আমরা প্রায় চিনি না। এর জন্য আমাদের ignorance আর রাজ্য সরকারের ঊদাসিনতা দুই দায়ি। অতীত নিয়ে কেউ বেঁচে থাকে না কিন্তু ইতিহাসকে ভুলে গেলে বর্তমান তথা ভবিষ্যৎ-কে গড়া যায় না, এতে বিরাট অঘটন অবসম্ভাবী।



বৃটিশ-এর হাতেই কলকাতার জন্ম এবং ১৯১১ সাল অবধি নানা ভাবে ইংরেজরা কলকাতাকে (অন্তত বাহ্যিক রূপে) লন্ডন করার চেষ্টা করেছিল (স্ত্র্যান্ড রোড দেখলেই বোঝা যায়)। এটা লোকে কি নজরে দেখে এসেছে আমার জানা নেই কিন্তু পরিবর্তিত রাজ্য সরকার এসে যখন কলকাতাকে লন্ডন আর দার্জিলিঙকে সূইজারল্যান্ড করার চেষ্টা করার কথা জানায় কেউ কেউ খুশি হল কেউ খোরাক হিসেবে নিল। ভারতবর্ষে একমাত্র জাতি যারা Renaissance-এর মুখ দেখেছে এবং আমরা তার গর্ব করতে ছাড়ি না, কিন্তু তাতে সাহেবদের কততা Contribution আছে সেটা ভেবে দেখি না। পরিচিত মহলে আমাকে যারা "Racist" বা "সাহেব (কালো)" বলেন তাদের ধন্যবাদ জানাই এই কথা ভেবে যে আমার কথা তাদের গায়ে লাগছে তাই এই অভিব্যাক্তি। মনে-প্রাণে তাদের অনেকে USA/UK/Europe এ চাকরীর জন্যে হন্যে হয়ে চেষ্টা করেন, নিদেন পক্ষে status symbol হিসেবে একটা European Holiday Tour।

ফিরে আসি কলকাতাতে। শহরের চরিত্রটা পালটে গেছে গত ৭-৮ বছরে, এর অনেকটা আমি অনুভব করতে পারি। যতদিন বুঝিনি বা না বুঝে ছিলাম বেশ ভালোছিলাম, এখন আর ভালো থাকতে পারছি না। সাধারণ লোকের ব্যবহার ক্রমশ বিশ্ববন্দিত দিল্লী ওয়ালাদের মতন হয়ে যাচ্ছে। পাড়া-কাল্‌চারের জায়গাতে এসেছে কমপ্লেক্স-কাল্‌চার। ভাবটা অনেকটা এরকম রোয়াকে বসে আড্ডা মারে পাড়ার বখাটেরা। কমপ্লেক্সে সন্ধেবেলা গাড়ি করে ফিরে টিভি-র সিরিয়াল/রিয়ালিটি শো দেখা, বন্ধুদের সঙ্গে রঙিন গেলাস হাতে বসা, অফিস নিয়ে পি-এন-পি-সি করা, এগুলো সময় নষ্ট নয় Elite-ism এর পরিচয়।

ভালো কি কিছুই নেই, সবই খারাপ ? আছে হয়ত কিন্তু চোখে পড়ছে না, মনে থাকছে না। হয়ত সংখাটা এত কম যে তা মনে থাকতে পারে না---তাই সেরকম থেকেও লাভ নেই। এর একটা বড় কারণ কলকাতাতে বাইরের রাজ্যের ভিড় বেড়েছে কর্মসূত্রে। শিল্প বা কর্ম সুযোগ কমা বই বাড়া তো দেখা যাচ্ছে না--তাও বেড়ে চলেছে জনসংখ্যা, সস্তার শহর হিসেবে যে ভ্রান্তি আছে হয়ত সেটাই কারণ। যারা আসছে তাদের শহর-কলকাতার প্রতি টান নেই, বিশ্বায়নের যুগে এটাই স্বাভাবিক, কিন্তু আমরা তো ঠিক করে "Global" হয়ে উঠতে পারিনি। ক্রমশ শহরটা রেল স্টেশনের মতন হয়ে যাচ্ছে যার কোনো স্বতন্ত্র চরিত্র থাকে না।

স্বাস্থ্য সচেতন বাঙ্গালীরা বাসী খাওয়া, frozen food কে অস্বাস্থ্যকর বলে মনে করে কিন্তু রাস্তার ধারের ভাঁড়ের চা, ঝুপড়ির মাছ-ভাত, রাস্তার ধারে নর্দমার পাশের বাজারে আপত্তি নেই। ভালো Public Transport এর অভাবে বেয়াইনি Shuttle Auto/Car হয়ে উঠেছে শহরের প্রাণ-ভোম্‌রা। Socialism এর নামে জোড় করে এ জিনিষ টিকিয়ে রাখা এক ধরনের Corruption----ideological corruption। দোষ কার সে বিতর্ক বা দায়িত্ব এড়ানো শেষ হবে না, কিন্তু আমাদের রোমান্টিক-সোশালিস্‌ম এর জন্য দায়ী। আমরা চাই বলে Shopping Mall হয় কিন্তু পার্ক হয় না।

Intellectualism আর আভিজাত্য নিয়ে আমরা খুব গর্ব করি, বার বার রবীন্দ্রনাথ/সত্যজিৎ রায় এর উদাহরণ দিয়ে থাকি। এই নিয়ে সুনীল গাঙুলী একবার ভালো বলেছিলেন --- আমরা রবীন্দ্রনাথকে মনে রেখেছি কোথায়, রবীন্দ্রসঙ্গীতকে মনে রেখেছি, বাকি স্বত্তাটার কতটুকু মনে রেখেছি বা গ্রহণ করেছি।

আগে ভাবতাম অনেক কিছু পাল্টে যাবে, শহরের শ্রীবৃধি হবে। এখন মেনে নিয়েছি সেই ম্যাজিক হবে না, আমরাই চাই না। অতীতটাই ইতিহাস এর পাতাতে থাকবে---হয়ত একদিন দেখা যাবে কেউ পড়ছে ---কলকাতা বলে একটা শহর ছিল যেখানে বাঙালী নামে এক উপজাতি থাকতো, বিয়ের বাড়িতে ধূতি-পাঞ্জাবী পড়া; সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে রবীন্দ্র চর্চা; মাছ-ভাত, ভাঁড়ে চা খাওয়া তাদের বৈশিষ্ট ছিল

"যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে"


"যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে"---সাধারণ কথা কিন্তু মেনে চলা কি ভীষণ কঠিন। 
                    
Picture Courtesy : https://www.pexels.com

"একলা চলা" মানে স্রোতের থেকে বেরিয়ে যাওয়া প্রয়োজনে বিপরীতে চলা। এই একলা চলার সবচেয়ে বড় চালেঞ্জ হল কিছুদূর অন্তর অন্তর "শুভাকাঙ্খীরা" এসে বলবে যে ভুল করছ, মাঝপথে ঝোরে যাবে। কেউ বলে গেছেন "Failure is the pillar of success"---আঙুর ফল টকের মতন শোনায়। ব্যার্থতার থেকে শেখার আছে যাতে ভবিষ্যত মসৃণ হয়, কিন্তু "History repeats itself" বলে এক্তা কথাও আছে। ভুল করে সব যদি ঠিক করে ফেলা যেত তাহলে দুনিয়াতে কোনো সমস্যাই থাকতো না।

বিরহ-বিচ্ছেদ


কেউ বলেন জীবনের সবচেয়ে বড় সত্য হল মৃত্যু। আমার মনে হয় বিরহ-বিচ্ছেদ সবচেয়ে বড় পাওনা। যদি বলি এর জন্যই বেচে থাকা তাহলে কি ভুল বলা হবে? স্কুল ছেড়ে কলেজ, সেখান থেকে কর্মক্ষেত্রে, কর্মজোগে বিভিন্ন জায়গাতে ঘুরে বেড়ানো সবের মধ্যেই রয়েছে বিচ্ছেদ, বন্ধু-বিচ্ছেদ আর বন্ধু-যোগ। যোগ-বিয়োগ সবেই আছে বিরহ। পরিবর্তন (ইচ্চছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত) কিছু যোগ, কিছু বিয়োগ আনবে। শুনেছি গীতায় বলা আছে বস্ত্র পরিবর্তনের মতন আত্মা ও দেহ পরিবর্তন করে। সবই জানি আমরা তাও মৃত্যু হৃদয় বিদারক।
                           
Picture Courtesy : https://www.pexels.com

বিচ্ছেদকে স্বীকার করে নিতে পারলে বিরহের কারণ থাকে না, কিন্তু বলা সহজ। জীবনের অলশ সময়ে আনন্দের চেয়ে দুখের কথা বেশি মনে পড়ে। বিরহ-বিচ্ছেদ একাকীত্বের প্রতীক, জীবনের নির্জন মূহুর্তে তাই বার বার ফিরে আসে। একে ভোগ করতে শিখলেই জীবনের ঢেউয়ে উদ্বেলিত হওয়ার ভয়/চিন্তা থাকবে না।



Dangal

There are not many days when deep into the night the Country kept staring at the TV set or the Mobile Screen without the prospec...